ভ্রাম্যমাণ  আদালতে খননযন্ত্র পুড়িয়ে ধ্বংসের জের
                                                     উপজেলা পরিষদের সামনে সড়ক অবরোধ করে ইউএনওর বিচার চেয়ে বিক্ষোভ
তৈয়বুর রহমান কিশোর,বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গত বৃহস্পতিবার
পৃথক দুটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে দুটি এক্সাভেটর (খনন যন্ত্র) আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করেন। এছাড়া দুটি মাটি পরিবহনের ট্রলি গাড়িরও
ক্ষতিসাধনের অভিযোগ রয়েছে আদালত সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়,এ ঘটনার জের ধরে ইউএনওর অপসারন, ক্ষতিপূরণ ও বিচার দাবি করে রোববার (০৬.০২.২০২২) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে
প্রায় দুই ঘন্টা উপজেলা পরিষদের সামনের স্টেশন সড়ক অবরোধ করে ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে  বিক্ষোভ করে কয়েকশ মানুষ। বিক্ষোভ চলাকালে ওই সড়কে
যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা এ সময় উপজেলা পরিষদের মূল ফটকও অবরুদ্ধ করে রাখেন। প্রায় ঘন্টাখানেক পর ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলেও
অবরোধকারীদের সরাতে ব্যর্থ হয়।

অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কর্মরত মাটি শ্রমিক, ট্রলির চালক, শ্রমিক, এক্সাভেটরের চালক, চালকের সহকারী (হেলপার)
ও ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির মালিকসহ দুই শতাধিক মানুষ অংশ নেন। এসময় বিক্ষোভকারীরা ইউএনওর অপসারন ও বিচার দাবি করে মূহুর্মূহু শ্লোগান দিতে
থাকেন। এছাড়া ব্যাংক ঋনের টাকায় কেনা তাঁদের বৈধ ও মূল্যবান এক্সাভেটর মেশিন পুড়িয়ে ধ্বংস করার ঘটনায় যথাযথ ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। বিক্ষোভ কর্মসূচীতে অংশ নেওয়া ক্ষতিগ্রস্থ খননযন্ত্রের মালিক তেলজুড়ীর
মো. আব্দুল আলিম জানান, আমি বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋন নিয়ে ও ধার দেনা করে গত বছর খননযন্ত্রটি কিনেছি। এখনও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আমি প্রায় ১৩ লাখ টাকা ঋনের দেনা আছি। এ অবস্থায় আমার বৈধ খননযন্ত্রটি
পুড়িয়ে ধ্বংস করায় অপূরণীয় ক্ষতি হলো।

থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কামরুল হোসেন জানান, উপজেলা পরিষদের সামনে সড়ক অবরোধ করে প্রায় ২ ঘন্টা ব্যাপি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেছেন কয়েকশ
বিক্ষোভকারী। এ সময় তাঁরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে পুড়িয়ে দেওয়া খননযন্ত্র ও ট্রলি গাড়ি ধ্বংসের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। গত শনিবার সন্ধ্যায় ইউএনও মো. রেজাউল করিম তাঁর কার্যালয়ে স্থানীয়
গণমাধ্যমকর্মীদের চা চক্রের আমন্ত্রণ জানান। এ সময় তিনি দাবি করেন, এলাকার একটি মহল আইন না বুঝে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার
বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে আমি আইনের মধ্যে থেকেই অবৈধভাবে মাটি কাটার কাজে ব্যবহৃত জব্দকৃত খননযন্ত্র ও ট্রলি গাড়ি বিনষ্ট করেছি। এ ব্যাপারে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সহায়তা কামনা করেন। ফরিদপুর জজ আদালতের আইনজীবি গাজী শাহিদুজ্জামান জানান, ২০০৯ সালে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের জারি করা মোবাইল কোর্ট নির্দেশিকার অধ্যায় ৭-এ বলা হয়েছে,
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক জব্দকৃত পচনশীল বা বিপদজনক বস্তু বিলিবন্ডেজ (ডিসপোজাল) করতে পারবেন। তবে জব্দকৃত আলামত বা মালামাল পচনশীল, বিপদজনক বা ধ্বংসযোগ্য না হলে তা কোন জিম্মাদারের জিম্মায় প্রদান করা যেতে পারে।